নুতন
– সুমিত মোদক
জানো তো, আমাদের বগনা গরুটার
একটা বাছুর হয়েছে;
ধবধবে সাদা রঙের একটা বাছুর …
তার কপালে একটা টিপও আছে;
কালো টিপ …
মনে হবে কেউ যেন সযত্নে টিপটা পরিয়ে দিয়ে গেছে;
এখন অনেক দুধ হচ্ছে;
বাড়ির সকলে খেয়েও বেশি হয়;
সে কারণে কয়েকটা রোজান রেখেছি;
এবার তুমি বাড়ি ফিরলে গোষ্ঠের মেলায় যাবো;
অনেক কিছু কেনার আছে;
সংসারের অনেক কিছু …
তোমার মনে আছে তো, কি কি কিনে দেবে বলে ছিলে!
সব নেবো, সব …
এবার আর ফাঁকি দিলে হবেনা, এই বলে দিলাম;
জানো তো, এ কদিন তোমার কথা খুব মনে পড়ছে;
খুব …
ওখানে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো!
হলেই বা কি করবে!
সব কিছু এখন বন্ধ যে;
সামনে যে ভীষণ লড়াই;
এ লড়াই তোমার, আমার, সমগ্র মানব জাতির;
আমাদেরকে জিততেই হবে;
আমরা জিতবই …
প্রতিবারের মতো এবারের পয়লা বৈশাখে
প্রথম সকালে সোনাকে নিয়ে
জমিতে গিয়ে খড়ের নাড়া জ্বালিয়ে আসবে;
তারপর গরুগুলোকে স্নান করিয়ে
হলুদ-আলতা পরিয়ে দিয়ো;
আর আমি নিম-হলুদ বেটে মাখিয়ে দেবো
তোমার চওড়া বুকে, পিঠে;
এই যা! তোমার তো বলা হয় নি,
আমাদের সোনা, বাছুরটার কি নাম রেখেছে জানো!
– নুতন;
আমাদের নুতন সাদা ধবধবে;
আমাদের নতুন প্রাণবন্ত, ছটফটে।
আমাদের ‘ফতেপুর’-এর মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ গোপালের গোষ্ঠ মেলা এবং এ অঞ্চলের এক সরল সাদামাটা গ্রাম্যবধূ যাঁর স্বামী বারবিদেশে থাকে, বছর শুরুর এ আনন্দঘন মুহূর্তটিতেই ফেরে তাঁর জীবনচর্য্যার কথায় ভরে উঠলো মন। আর এ বছর যে এ মেলার স্বাদ আস্বাদন থেকে আমরা এলাকাবাসী সবাই দূরে থাকবো-সেটাও কবিতাটি পড়ে মনে দাগ কাটলো ! কবি শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা এবং শুভ নতুন বছরের সর্বাঙ্গীন শুভ কামনা করি।